স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) অন্তর্ভুক্ত সাবেক দক্ষিণখান, উত্তরখান ও হরিরামপুর ইউনিয়নের নতুন ১০টি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বাড়ি-ঘরের উপর ধার্যকৃত অতিরিক্ত হারে হোল্ডিং কর কমানো এবং সাত বছরের বকেয়া কর মওকুফের দাবি জানিয়েছেন।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসী এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ২০১৮ সালে তৎকালীন সরকার কথিত উন্নয়নের আশ্বাস দিয়ে সাবেক তিন ইউনিয়নকে গেজেটের মাধ্যমে ডিএনসিসির আওতায় আনলেও, গত সাত বছরে এলাকার নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধিতে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। বরং এলাকা এখন অবহেলা, জলাবদ্ধতা ও দুর্ভোগের প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
তারা জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থা নষ্ট, রাস্তায় ল্যাম্পপোস্ট না থাকায় অন্ধকার, মশা নিধন কর্মসূচির অভাবে ডেঙ্গু ও চুলকানির প্রকোপ বেড়েছে। নির্দিষ্ট ময়লা ফেলার স্থান না থাকায় এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, ফলে স্বাভাবিক জীবনযাপনও ব্যাহত হচ্ছে।
অর্থনৈতিক চাপের অভিযোগ:
বক্তারা বলেন, বাড়ি ও ফ্ল্যাট নির্মাণে অধিকাংশ মালিক ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরশীল। ঋণের কিস্তি পরিশোধের পাশাপাশি যখন হঠাৎ উচ্চ হারে কর ও সাত বছরের বকেয়া করের নোটিশ আসে, তখন তা তাদের ওপর অসহনীয় আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছে।
তারা অভিযোগ করেন, “সিটি কর্পোরেশন উন্নয়ন না করেও কর বাড়িয়েছে। উপরন্তু সাত বছরের বকেয়া কর জরিমানাসহ একত্রে পরিশোধের জন্য নোটিশ দিয়ে মামলা করার হুমকি দিচ্ছে। এটি জনগণের সঙ্গে অবিচার।”
মানববন্ধন ও আবেদনপত্র: সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৬ জুন এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ডিএনসিসির প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন দেওয়া হয় এবং ৩ সেপ্টেম্বর হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে আঞ্চলিক অফিসের সামনে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। কিন্তু প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
দাবি ও প্রত্যাশা:
এলাকাবাসী বলেন, “উন্নয়নহীন এলাকাকে অনুন্নত রেখেই কর বাড়ানো অন্যায়। নাগরিক সুবিধা না বাড়িয়ে কর বাড়ানো জনগণের প্রতি অবিচার।”
তারা ২০১৮ সালের গেজেট বাতিল করে বাস্তবতার ভিত্তিতে কর পুনঃনির্ধারণ ও সাত বছরের বকেয়া কর মওকুফের আহ্বান জানান।
নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত না করে কর বাড়ানোর এই নীতিকে বক্তারা “অমানবিক” আখ্যা দেন এবং বলেন, “ডিএনসিসি যেন জনগণের ওপর নয়, জনগণের পাশে দাঁড়ায়।”