স্টাফ রিপোর্টার: চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কের ‘আদম ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’-এর আট তলায় প্রথমে আগুন লাগে। পরে নিচের দুটি ফ্লোরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কারখানাটিতে হাসপাতালের যন্ত্রপাতি তৈরি করা হতো। ৯ তলা ভবনটিতে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক কাজ করতেন বলে জানা গেছে। আগুনে বহু মানুষ হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট। কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বা কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) ৯ তলা ভবনটিতে আগুন লাগে। সেটি আস্তে আস্তে নিচের দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রাথমিকভাবে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট কাজ করছে। পরে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ সেনা বাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়। কারখানাটিতে হাসপাতালে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও তোয়ালে তৈরি করা হতো। প্রচুর পরিমাণে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং তীব্রতাও অনেক বেশি।
এক বিবৃতিতে ফায়ার সার্ভিস জানায়, বৃহস্পতিবার বেলা ২টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রাম সিইপিজেডের লিংকরোডে একটি কারখানায় আগুন লাগার খবর পায় তারা। খবর পেয়ে ২টা ১২ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিস। ৯তলা একটি ভবনের পাঁচ, ছয় ও সাততলায় আগুন লেগেছে। সিইপিজেড, বন্দর, কেইপিজেড ও আগ্রাবাদের ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আইএসপিআর জানিয়েছে, চট্টগ্রাম ইপিজেডের আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পাঁচটি ইউনিট। এছাড়াও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে কাজ করছে।
সিএমপির ইপিজেড থানার ওসি মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া বলেন, অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড নামের ওই কারখানার ৬ ও ৭ তলায় আগুন লেগেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে চিকিৎসা সরঞ্জামও তৈরি করা হয়। মূলত জিনিসপত্র রাখার গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে কারখানাটির সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ওইখানে লোকজন ছিল না বলে জেনেছি। যারা নিচের তলায় ছিলেন তারা বেরিয়ে এসেছেন। কেউ কেউ হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে সামান্য আহত হয়েছেন। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট একসঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। কীভাবে আগুন লেগেছে তা জানা যায়নি। হয়তো আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানতে পারবেন।
অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরোজ আলী ফখরী বলেন, পুরো ভবনের সবকটি ফ্লোর তাঁদের। ওপরের দিকের ফ্লোরে লাগা আগুন নিচের দিকেও ছড়িয়ে পড়ছে। তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত জানাতে পারেননি তিনি।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট কাজ করছে। আমরা ভবনটির ৬ ও ৭ তলায় আটকে পড়া ২৫ জনকে উদ্ধার করেছি। তারা ধোঁয়ায় আটকা পড়েছিল। আমরা তাদের নিরাপদে সরিয়ে এনেছি। তিনি আরও বলেন, আটতলায় যারা ছিল তারা জানিয়েছে সেখানে আর কেউ নেই। সবাই নিরাপদে নেমে এসেছে।
চট্টগ্রাম ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আবদুস সোবহান বলেন, ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এখন পর্যন্ত প্রাণহানি বা আহত হওয়ার কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।