খিলক্ষেতে কবে শেষ হবে চাঁদাবাজ দানবদের রাজত্ব ?

প্রকাশিতঃ অক্টোবর ৫, ২০২৫, ০৮:৫০

এস.এম.নাহিদ : দীর্ঘদিন ধরে নিকুঞ্জ এলাকায় চাঁদার জাল বিস্তার করে জনগণের ঘাড়ে পা রেখে চলা মোঃ ইসমাইল হোসেন বাবু ওরফে মোফা বাবু অবশেষে আবারও সেনাবাহিনীর জালে ধরা পড়েছে। শুক্রবার (৩রা অক্টোবর) বিকেলে খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ-২ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটকরা হলেন- শীর্ষ চাঁদাবাদ ইসমাইল হোসেন বাবু ওরফে মোফা বাবু (৩২) ও তার দুই সহযোগী জাফর ইকবাল (২৮) এবং মোফাজ্জল (৬৫)। এলাকাবাসী বলছে এটি তার ৩য় বার সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার। কিন্তু প্রতিবারই সে ফিরে আসে এবং আরও বেপরোয়া হয়ে।প্রশ্ন একটাই-কেন বারবার ধরা পড়েও ছাড়া পায় এইসব দলবাজ দানবরা?

স্থানীয় ব্যবসায়ী মোঃ সুজন মিয়া বলেন,প্রতিদিন কিছু না কিছু চাইতো। এবার ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। না দিলে দোকান গুঁড়িয়ে দেয় ও আমাকে মারধর করে। প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আমি বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর কাছে যাই।তবে এই ঘটনা নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে মোফা বাবু খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ এলাকায় চাঁদাবাজির সাম্রাজ্য চালিয়ে আসছে।তাকে কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না।কারণ তার মাথার উপর আছে রাজনৈতিক ছাতা-নাম তার সিলটি বাবু।স্থানীয় এক বিএনপি নেতা।মোফা বর্তমানে খিলক্ষেত থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সচিব। তার এই পরিচয়ই যেন অপরাধের লাইসেন্স।প্রতিবার ধরা পড়ে থানায় যায়, আবার ঘুরে আসে।আর প্রতিবারই আরও বেপরোয়া আরও হিংস্র হয়ে ওঠে।

স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগর উত্তর সভাপতি শেখ ফরিদ হোসেন বলেন-দলে সন্ত্রাস চাঁদাবাজের ঠাঁই নেই। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।প্রশ্ন হলো-আর কতবার অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেবেন? সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়া কি যথেষ্ট প্রমাণ নয়? এতবার গ্রেফতার, জনসাধারণের ক্ষোভ,দিনের পর দিন চাঁদাবাজির খবর—এগুলো কি কিছুই নয়?দলীয় পরিচয় কি এতই পবিত্র যে তা অপরাধীর ঢাল হয়ে দাঁড়ায়?কেন রাজনৈতিক নেতারা এই দানবদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন? সাধারণ জনগণ কবে বিচার পাবে এই দলবাজ গুন্ডাদের বিরুদ্ধে?

এলাকাবাসী আজ হাঁপিয়ে উঠেছে। তারা বলছে পুলিশ দেখেও না দেখে চলে যায়। প্রশাসন চুপ। দল মুখ ঘুরিয়ে থাকে। একমাত্র সেনাবাহিনীরাই এসেছিলো আমাদের পাশে।সেনাবাহিনী মোফাকে খিলক্ষেত থানায় হস্তান্তর করেছে। কিন্তু ইতিহাস বলছে-সেখান থেকেই সে আবার ফিরবে, আবার নতুন করে চাঁদা তুলবে, আবার জনজীবনকে করবে জিম্মি।এই দলীয় সন্ত্রাসী সংস্কৃতির মূলোৎপাটন করতে না পারলে এক মোফা যাবে দশ মোফা জন্ম নেবে।এই যুদ্ধ জনগণের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে নয়, এটা রাষ্ট্রের ভেতরে গজিয়ে ওঠা অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে।আইন কি শুধু সাধারণ মানুষের জন্য? দলীয় অপরাধীরা কি আইনের ঊর্ধ্বে?রাজনীতির ছায়ায় জন্ম নেওয়া এই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে এখনই দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নিলে জনগণ শিখে যাবে—বিচার পাওয়ার একমাত্র পথই সেনাবাহিনী।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি এভাবেই বারবার অপদস্থ হবে চিহ্নিত অপরাধীদের রাজনৈতিক পরিচয়ের কাছে? দলগুলো কি আসলে অপরাধীদের আস্তানা হয়ে উঠছে? এইসব প্রশ্নের উত্তর এখনই চাই। কারণ – দ্বিধাহীন, শক্ত ও ন্যায়ের পক্ষে জনগণ এখন জবাব চায়….!