এস.এম.নাহিদ: রাজধানীর অন্যতম সম্ভাবনাময় এলাকা খিলক্ষেত। পূর্বাচলের প্রবেশদ্বার, ঢাকা মহানগরের ঘনবসতিপূর্ণ জনপদ-যেখানে দিনকে দিন বাড়ছে জনসংখ্যা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও নাগরিক চাহিদা। অথচ এই খিলক্ষেতেই দীর্ঘদিন ধরে চলছে উন্নয়নের নামে অব্যবস্থাপনা, চাঁদাবাজির দৌরাত্ম্য, এবং রাজনীতির নামে তামাশা!
খিলক্ষেতের সাধারণ মানুষের চাওয়া খুব বেশি নয়-একটা নিরাপদ পথ চলার সুযোগ, ন্যায্য হারে পণ্য কেনার স্বাধীনতা, বখাটে ও দালালদের দৌরাত্ম্য থেকে মুক্তি। কিন্তু এসবের পরিবর্তে তারা পাচ্ছে রাজনৈতিক নেতাদের নির্বিকার আচরণ, প্রশাসনিক নীরবতা, এবং সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর একচেটিয়া আধিপত্য।ফুটপাত দখল, বাজারে চাঁদাবাজি, অটোরিকশা থেকে মাসোহারা, নারী-শিশুদের চলাচলে হয়রানি-এগুলো এখন খিলক্ষেতের নিত্যদিনের দৃশ্য।আর এসবের আড়ালে রয়েছে কিছু তথাকথিত রাজনৈতিক কর্মী, যারা জনগণের প্রতিনিধি হওয়ার দাবি করলেও আসলে তারা জনগণের ঘাড়ে বসে শাসনের খেলায় মেতে আছে।
রাজনীতি যাদের উচিত ছিল জনসেবা, তাদের একটি অংশ এখন হয়ে উঠেছে জনভীতির উৎস। ব্যর্থ নেতৃত্ব আর কৃত্রিম ক্ষমতার জোরে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কিছু বাহিনী-যাদের না আছে ভোটার তালিকায় নাম, না আছে জনসম্পৃক্ততা। অথচ এদের পেছনে আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে কিছু স্থানীয় নেতা, যারা হয়তো ভাবছেন-ভয় দেখিয়ে এলাকা নিয়ন্ত্রণ করাই রাজনীতি।জনগণ এখন প্রশ্ন করে খিলক্ষেতে উন্নয়ন কোথায়? রাস্তার পাশে ময়লার ভাগাড়, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই, বখাটেদের উৎপাত বাড়ছে, ভোর থেকে রাত পর্যন্ত বাজারে চলে চাঁদাবাজি। অথচ নেতারা ব্যস্ত নিজেদের ছবি সম্বলিত ব্যানারে, আর প্রশাসন ব্যস্ত ফাইল ঘোরানোর খেলায়।
খিলক্ষেতবাসী এখন চায় হুঁশ ফেরানোর রাজনীতি। তারা চায় জনসেবার প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তব পদক্ষেপ। তারা চায় ভয়ভীতি নয়, নিরাপদ চলাফেরার নিশ্চয়তা। জনগণ আজ স্পষ্ট করে দিতে চায়-রাজনীতি মানে যদি হয় সন্ত্রাসের পাহারাদার হওয়া, তাহলে সেই রাজনীতি আর খিলক্ষেতে চলবে না।নেতারা যদি জনগণের পাশে না দাঁড়ায়, তবে আগামী নির্বাচনে জনগণই দেখিয়ে দেবে আসল মালিক কারা। খিলক্ষেত উন্নয়নের নামে যারা নাটক করছেন, সময় এসেছে তাদের পর্দা ফাঁসের।
রাজনীতিকে যদি সত্যিকার অর্থে মানুষের কল্যাণে কাজে না লাগানো হয় তাহলে খিলক্ষেতের মতো জনপদগুলো হবে অব্যবস্থাপনার জীবন্ত উদাহরণ। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বকে এখনই সজাগ হতে হবে। জনবিচ্ছিন্ন, দুর্বৃত্তপোষণকারী রাজনীতির দিন শেষ।তাই এখনো সময় আছে-রাজনীতি ফেরাও মানুষের মাঝে। জনগণ মনে রাখে কারা পাশে ছিল, কারা মুখ ফিরিয়ে ছিল।আজ খিলক্ষেতবাসী চায় কাজের মানুষ, কথা নয়। চায় মানবিকতা নিয়ে ভাবা রাজনীতি।