মাখদুম সামি কল্লোল: ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মানুষকে বাঁচাতে দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবি জানিয়েছে ‘প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন’ ও ‘বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট-বাটা’।
শনিবার ২০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টা থেকে পুরান ঢাকার মিলব্যারাক পুলিশ লাইনস সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীর খাদ্য গুদাম জেটিতে ধূমপান বিরোধী সমাবেশ ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচিতে স্থানীয় জনগণ ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মানুষ, ছাত্র-ছাত্রী, লঞ্চ ও নৌযান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হাজী ফারুক হোসেনের সভাপতিত্বে এবং প্রত্যাশা সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদের সঞ্চালনায় কর্মসূচি প্রাণবন্ত করতে বাউল গানের আয়োজন করা হয়। গানের ফাঁকে ফাঁকে বক্তারা ধূমপানের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরেন। বিকেলের বৃষ্টির পর শুরু হওয়া এই কর্মসূচি রাত ৮টা পর্যন্ত চলে। এতে প্রায় ৫০০ মানুষ গণস্বাক্ষরের মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, প্রতিবছর দেড়লক্ষাধিক মানুষ তামাকজনিত রোগে প্রাণ হারাচ্ছে। অথচ দেশে কার্যকর আইন থাকলেও যথাযথভাবে প্রয়োগ না হওয়ায় জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হয় এবং ২০১৩ সালে তা সংশোধিত হয়। বর্তমানে আবারও আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে। আইনে পাবলিক প্লেস, পরিবহন, শিক্ষা ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে ধূমপান নিষিদ্ধ এবং তামাকপণ্যের বিজ্ঞাপন, প্রচার ও পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ করা হলেও বাস্তব প্রয়োগ দুর্বল।
তাদের অভিযোগ, বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও নদী বন্দরের মতো জনবহুল স্থানে এখনো প্রকাশ্যে সিগারেট বিক্রি হচ্ছে এবং ধূমপান চলছে। এতে নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। আইন অনুযায়ী এসব কর্মকাণ্ড শাস্তিযোগ্য অপরাধ হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় অপরাধীরা বারবার রেহাই পাচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন, সচেতনতার পাশাপাশি কঠোর আইন প্রয়োগ এবং শক্তিশালী আইন প্রণয়ন ছাড়া ধূমপানের ভয়াল থাবা থেকে জাতিকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ ও সুন্দর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে দ্রুত আইন সংশোধন ও কার্যকর বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।