খিলক্ষেতে কামরুল দম্পতির রক্তাক্ত আর্তনাদ-স্ত্রীর দুই পা ভেঙে দিলো মামুন বাহিনীর সন্ত্রাসীরা

প্রকাশিতঃ সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ১০:৩৬

এস.এম.নাহিদ:রাজধানীর খিলক্ষেতে ফের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা! গুটিকয়েক সুবিধাভোগীর ছত্রছায়ায় চলা মামুন বাহিনী এবার নির্মমভাবে হামলা চালিয়েছে নিরীহ কামরুল দম্পতির ওপর। সংঘবদ্ধভাবে মব তৈরি করে প্রকাশ্যে চালানো এই হামলায় গুরুতর আহত হন তারা। এলাকাবাসী এই নৃশংস হামলাকে বলছে-এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাচেষ্টা।প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, মামুন বাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা বেধড়ক মারধর করে কামরুল ও তার স্ত্রীকে। চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয় যেন কেউ এগিয়ে আসার সুযোগ না পায়। এ সময় চিৎকার করে জীবন ভিক্ষা চাইলেও হামলাকারীরা থামেনি।

কামরুলের ভাষ্যমতে – মঙ্গলবার ৯ই সেপ্টেম্বর বেলা আনু:৩টার দিকে কামরুল ও তার স্ত্রী রেল মন্ত্রনালয় থেকে লিজ নেয়া (চূড়ান্ত অনুমোদনের পথে থাকা) জায়গায় ওয়েলফেয়ার সোসাইটির তথা ইডেন পার্কের বৈদ্যুতিক মিটার লাগানো দেখতে পেয়ে নিকটস্থ থানায় গিয়ে জানান।পরে থানা থেকে পুলিশের দুইটি টিম নিয়ে রেললাইনে আসা মাত্রই মামুন সহ তার বাহিনীর লোকজন কামরুলকে টিন দিয়ে ঘেরা রেলওেয়ের সীমানায় নিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে।স্বামীকে বাচাতে স্ত্রী জোসনা বেগম এগিয়ে এলে পিছন থেকে মশিউর রহমান মশি গলাচেপে ধরে।পাশে দাড়ানো জেনারেটর হেলাল,ফয়সাল,শরিফ ও মামুন(২) চারপাশ ঘিরে রাখে এবং বাহিনী প্রধান মামুন হাটু দিয়ে জোসনা বেগমের দুই হাত ধরে তার হাটুতে সজেরো আঘাত করতে করতে দুই-পা ভেঙে ফেলে।এই সময় সৈকত কামরুলেকে বারবার ‘তোকে জবাই করবো’ কথাটি বলতে থাকে।একপর্যায়ে রক্তাক্ত কামরুল ও তার স্ত্রী মাটিতে লুকিয়ে পড়লে উপস্থিত সন্ত্রাসীরা পুলিশ আসতে দেখে দ্রুত রিক্সায় উঠিয়ে দেয় এবং কামরুলকে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে মামুনের নেতৃত্বে মিছিল করতে থাকে মব সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসীরা।রিক্সা থেকে পুলিশ সদস্যরা কামরুল দম্পতিকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। দুইজনেরই অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে সেখান থেকে দ্রুত তাদের এম্বুলেন্সে করে পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করে।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে উল্লেখিত ঘটনার সূত্রপাত এবং প্রধান ইস্যু।পরিকল্পিতভাবেই মব সৃষ্টি করে কামরুল দম্পতির উপর এই হামলা।যার জ্বলন্ত ও দৃশ্যমান প্রমান বৈদ্যুতিক মিটার।মিটারের মালিক ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট তথা ইডেন পার্ক,আর জায়গার মালিক বাংলাদেশ রেলওয়ে?এটা কিভাবে সম্ভব? ওয়েলফেয়ারের নিজস্ব জায়গা ছাড়া ডেসকো কিভাবে এই মিটারের অনুমোদন দিলো?রেলওেয়ের এই সরকারি জায়গায় কেন ব্যাক্তিগত মিটার?এই ওয়েলফেয়ার সোসাইটি মালিক কে? সরকারি জায়গায় মিটার বসিয়ে কি করতে চায় তারা,কি তাদের উদ্দেশ্য ?প্রকাশ্য দিবালোকে শতাধিক সন্ত্রাসীরা একজন নারীকে তার স্বামীর সামনেই কড়মড় করে দুই-পা ভেঙে দিয়ে কি জানান দিলো? খিলক্ষেতবাসীকে কি জানাতে চায় এরা? পুরো ঘটনার নেপথ্যের খলনায়ক কে? আমরাও জানতে চাই-আমরা জানাতে চাই।

এক ছেলে ও দুই মেয়ের জনক, মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র (বাসক)-এর কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কামরুল ও তার স্ত্রীকে বর্বরভাবে পিটিয়ে পঙ্গু করে দিয়েছে খিলক্ষেতের কুখ্যাত সন্ত্রাসী মামুন বাহিনী।এই কাপুরুষোচিত হামলা শুধু একজন মানবাধিকার কর্মকর্তাকেই নয়-তিনটি অবুঝ শিশুকেও ফেলে দিয়েছে ভয়াবহ অনিশ্চয়তার মুখে। যাদের চোখে এখন শুধুই আতঙ্ক, নিরাপত্তাহীনতা।প্রশ্ন ওঠে, এ কোন দেশে বাস করছি আমরা? যেখানে একজন মানবাধিকার কর্মীকেও রক্ষা করতে ব্যর্থ প্রশাসন?

এই হামলার দায় শুধু মামুন বাহিনীর নয়-নিরব পুলিশ প্রশাসনেরও! এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলতে থাকলে কাল হয়তো আরেকজন কামরুল রাস্তায় রক্তাক্ত হবে।এখনই সময় দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কারণ-জনগণ চায় জবাব!