স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস উত্তরাতে চলছে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ডিডি মোঃ নুরুল হকের পকেট বানিজ্য। সরেজমিন তদন্তে জানা গিয়েছে এই অফিসের দারোয়ান আনসার থেকে শুরু করে পিয়ন ও কিছু অফিসার জড়িত রয়েছে এই পকেট বানিজ্যে। লাইন ছাড়া একটি আবেদন জমা করিয়ে দিতে ১৩০০ টাকা অফিস খরচ হিসেবে দিতে হয়। ডিডি নুরুল হককে দিতে হয় ১ হাজার আর ৩ শত নেয় অফিস দালাল তার বেশীটা যেই দালাল কাজটি ধরে সে নিতে পারে। তাতে হয়তো বাহিরে দাড়িয়ে থাকা দালাল নামধারী লোকগুলো প্রকৃতপক্ষে পায় ২/৩ শত টাকা। যদি আর্জেন্ট সার্ভিস ১ দিনে মানে সুপার এক্সপ্রেস সার্ভিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট করাতে হয় সেইক্ষেত্রে ডিডিকে ২০০০ টাকা দিতে হয় তারপর আবার অফিস খরচ আরো দিয়ে পাসপোর্ট পেতে হয়। অফিস থেকে মানে জমা নেয়ার কাউন্টারে অনেক সময় অযথা কাগজপত্র চেয়ে থেকে যাতে জমা প্রদানকারী বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। তখন সেই লেকগুলো সেই সমস্যা সমাধানের পথ খুজে অফিসের লোকজন বা বাহিরে অপেক্ষমান চিন্হিত দালাল নামধারী লোকজনের সাহায্যে টাকার চুক্তিতে সমাধান করে কাগজপত্র জমা করে। অফিস সংলগ্ন রাস্তার ফুটপাতের উপরে অবৈধভাবে গড়ে তুলেছে চাঁয়ের দোকান ও ৪ টি কম্পিউটার কম্পোজ সহ পাসপোর্টের নানা কাজ করার দোকান। চাঁয়ের দোকানটি শুধুই আই ওয়াশ মাত্র। আসল ব্যবসা হল পাসপোর্ট বানানোর সকল কাজই দোকানদার করে থাকে। সাথেই ভাইয়েরদোকান। সেখানেই পাসপোর্টের সকল কাজ করার জন্য কাস্টমারদের দিয়ে দেয়। এইসব দোকানগুলো ডিডির আশীর্বাদে চলতেছে বলে জানা যায়। এ ছাড়াও অফিসের তিন পাশে প্রায় ১৫ টি কম্পোজ সহ কম্পিউটারের কাজ করার দোকান রয়েছে। এই দোকানগুলোতে লোক নিয়োগ দেয়া আছে যারা কিনা পাসপোর্ট অফিসের সামনের থেকে কাজ ধরে নিয়ে আাসে। যদিও তাদেরকে সবাই দালাল বলেই পরিচিত। আসলে এদের প্রায় সকলেই নিতান্তই বিপদে পড়ে এই পেশাতে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছে। এই সকল দোকানের সকল কাজই চুক্তির ভিত্তিতে করে থাকে। চুক্তির ভিত্তিতে করা কাজগুলোর জন্য লাইনে দাঁড়াতে হয়না শুধু ফিঙ্গার নেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়াতে হয়। এভাবে নানা ভাবে ডিডি প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশী টাকা পকেটস্থ করে চলেছে বলে ধারনা করা হয়। ৫০ হাজার টাকা তো ৫০ টি আবেদনের কাজ করলেই ইনকাম। সরেজমিন তদন্তে দেখা গিয়েছে মোতালেব নামের একজন, ডিডির খুব কাছের দালাল রয়েছে। যে কিনা আনসারের চাকুরী ছেড়ে এই দালালি কাজে যোগ দিয়েছে। কেননা প্রতিদিন ৮/১০ হাজার টাকা বিভিন্ন টেকনিকে ইনকাম করতে পারে। জটিল কিছু পাসপোর্ট রয়েছে এমন কি রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট ও কোন এঙ্গেল থেকে এই ধরনের খুবই কাছের মানুষজন দ্বারা করানো হয়। এতে ফায়দাও প্রচুর থাকে। আরো দেখা যায়, এনামুল নামের একজন রয়েছে তিনিও ডিডির আশীর্বাদে আনসারের চাকুরী ছেড়ে এই দালালি কাজে মনোযোগ দিয়েছে। দৈনিক ৫/৭ হাজার টাকা এই এনামেরও ইনকাম হয়ে থাকে। এ ছাড়া হারুন নামের একজন আছে যে কিনা অফিস সংলগ্ন ফুটপাতের উপর দোকান বানিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে পাসপোর্ট তৈরীর নানা ফর্মুলা আর তার সমাধান দিতে ডিডির আশীর্বাদে কামিয়ে নিচ্ছে দৈনিক ৫/৭ হাজার টাকা। এছাড়া অফিসের আনসার ফারুক ও আজিজ সহ অফিস সহকারী আরিফ সহ পিয়ন জিয়াকে ও পাসপোর্ট বানানোর কাজে সক্রিয় ভুমিকায় থাকতে দেখা যায়। সরিজমিনে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে যা আমি বুঝলাম সেটা হল পাসপোর্ট অফিসে আমরা যাদের দালাল বলে চালিয়ে দেই বা চিন্হিত করি তারাই শুধু দালাল নয়। দালালদের গডফাদার বা বড় মাপের দালাল হচ্ছে ডিডি নুরুল হক নিজেই। তারপর তার অফিসার,পিয়ন এমনকি আনসারও। স্যার যেই লাইনে থাকবে তারাওতো সেই লাইনেই থাকবে এটাইতো স্বাভাবিক। আর কতদিন এভাবে চলবে এই পাসপোর্ট অফিস। এর কি কোন সমাধান নেই। পাসপোর্ট গ্রহিতারা আর কতদিন এই সিন্ডিকেটের কাছে জিন্মি থাকবে। এ ধরনের নানা প্রশ্ন আজ ভুক্তভোগীদের। অদ্য ৯ সেপ্টেম্বর ডিডি নুরুল হকের সাথে অফিসে সাক্ষাৎ করলে তিনি ধোঁয়া তুলসীপাতার মত আচরন করেন। ভুক্তভোগীরা অচিরেই এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে জোরদার ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ আশা করছেন।
উত্তরা পাসপোর্ট অফিস ডিডির পকেট
প্রকাশিতঃ সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৫, ১১:৫৬
