নিজস্ব প্রতিবেদক : ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস ২০২৫ উদযাপন করেছে, যা সামাজিক উন্নয়ন ও জলবায়ু সহনশীলতা অগ্রগতিতে স্বেচ্ছাসেবক ও যুব নেতৃত্বের ভূমিকা তুলে ধরে। এই অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে ভিএসও বাংলাদেশ, ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজ (আইডিএমভিএস) এবং ন্যাশনাল ইয়ুথ ফোরাম (এনওয়াইএফ) আয়োজন করে, সাথে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে অংশ নেয় গেইন, আইপাস বাংলাদেশ ও ইসলামিক রিলিফ।
আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস হল জাতিসংঘ স্বীকৃত একটি বৈশ্বিক দিবস যা স্বেচ্ছাসেবকদের সম্মান ও নাগরিক সম্পৃক্ততা উন্নয়নের জন্য নিবেদিত। ২০২৫ সালের বাংলাদেশের এই উদযাপন সরকারি সংস্থা, উন্নয়ন সংস্থা, যুব প্লাটফর্ম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে একত্রিত করেছে এই বার্তা জোরালোভাবে তুলে ধরতে যে প্রতিটি অবদানই গুরুত্বপূর্ণ এবং একটি টেকসই ও সমতাভিত্তিক ভবিষ্যৎ গঠনে স্বেচ্ছাসেবকদের অপরিহার্য ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিতে।
এ বছরের প্রধান প্রতিপাদ্য, প্রতিটি অবদানই গুরুত্বপূর্ণ এই ধারণাকেই আলোকিত করে যে স্বেচ্ছাসেবকরা ছোট-বড় সকল কাজের মাধ্যমে সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের সূচনা করেন এবং অর্থপূর্ণ পরিবর্তনের প্রেরণা জাগান।
অনুষ্ঠানটি জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয়, অতঃপর ভিএসও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর খবিরুল হক কামালের উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করা হয়। সেইসময় অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিতি ছিলেন জনাব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মাননীয় সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় (প্রধান অতিথি), অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, পিএইচডি, মাননীয় উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (অনুষ্ঠানের সভাপতি), ড. শেখ মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন, যুগ্ম সচিব, যুব শাখা, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, মি. স্টিফেন ফর্বস, কান্ট্রি ডিরেক্টর, ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশ, মিস নায়োকা মার্টিনেজ-ব্যাকস্ট্রম, ফার্স্ট সেক্রেটারি ও ডেপুটি হেড অব ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন, সুইডেন দূতাবাস ।
ড. ইলিজা আজাই অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত থাকতে না পারলেও তিনি একটি শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান, যা অনুষ্ঠানে পাঠ করে শোনানো হয়। অনুষ্ঠানে আরও অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন যুব নেটওয়ার্ক, আন্তর্জাতিক এনজিও, সুশীল সমাজ নেতা, জলবায়ু কর্মী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
উদযাপনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের মূল বক্তব্য প্রদানের পর, এনওয়াইএফ স্বেচ্ছাসেবকদের একটি সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপিত হয়।
পরিবর্তনের সূচনা: যুবদের সেচ্ছাসেবী মনোভাব ও জলবায়ু পদক্ষেপ, প্রতিটি অবদানই গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় একত্রিত হন আইআরসি, আইপাস বাংলাদেশ, ব্রিটিশ হাইকমিশন প্রতিনিধি, জিআইজেড, নেদারল্যান্ডস দূতাবাস এবং শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা। আলোচনায় যুব-নেতৃত্বাধীন জলবায়ু সমাধান, সম্প্রদায়ের সমাবেশ এবং স্বেচ্ছাসেবা-চালিত নেতৃত্বের গুরুত্বের উপর জোর দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে অসামান্য যুব অবদানকে সন্মাননা জানানো হয় নিম্নোক্ত ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে:
২০২৫ সালের সেরা যুব স্বেচ্ছাসেবক পুরস্কার
সেরা বিভাগীয় যুব ফোরাম পুরস্কার
যুব-নেতৃত্বাধীন জলবায়ু গ্র্যান্ট বিজয়ী
এই স্বীকৃতিগুলো নেতৃত্ব, জলবায়ু এডভোকেসি, লিঙ্গসমতা উদ্যোগ এবং উদ্ভাবনী সামাজিক কর্মকাণ্ডকে সম্মাননা জানায়।
সমগ্র অনুষ্ঠান জুড়ে বক্তারা এই বিশ্বাসের উপর জোর দেন যে স্বেচ্ছাসেবকতা অন্যদের অনুপ্রাণিত করে সম্পৃক্ত হতে এবং জলবায়ু-সহনশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক সম্প্রদায় গড়ে তুলতে উৎসাহিত করে। এটি আইভিডি ২০২৫-এর মূল বার্তাকেই প্রতিফলিত করে, যে প্রতিটি অবদান, ছোট হোক বা বড়, প্রভাব সৃষ্টি করে।
অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি ড. আরমান হোসেন আনুষ্ঠানিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ও সন্মানিত অতিথি শেখ মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন, যুগ্মসচিব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, সমাপনী বক্তব্য প্রদান করে সারা বাংলাদেশে যুব ও স্বেচ্ছাসেবক-নেতৃত্বাধীন জলবায়ু উদ্যোগ সম্প্রসারণে সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।