ভোলায় মোসাদ্দেক হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে সিআইডি

প্রকাশিতঃ সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৫, ০৯:১৬

মীর সাজু, চরফ্যাশন থেকে : অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, জনৈক আঃ হাসিম হাওলাদারের মেয়েকে ধর্ষণের মামলায় আসামী হওয়া প্রতারক স্বভাবের বাটপার মোসাদ্দেক হোসেন ও লম্পট চরিত্রের পুত্র মোশারেফ হোসেন (মাজেদ) পিতা-পুত্র গফুরপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির পাল্টা-পাল্টি ভুয়া প্রধান শিক্ষক দাবীর প্রমান মিলেছে। সেই সঙ্গে, ওদের পরিবারের মধ্যে ৭ (সাত) জনই স্কুলটির শিক্ষক-কর্মচারীর তালিকায় রয়েছে। তবে, আশ্চার্য্যের বিষয় হলো,আদালত নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্যান বেইজ অফিসে পাঠানো স্কুলটির জনবলের তথ্যে ভূয়া। প্রধান শিক্ষক দাবীকারী মোশারেফ হোসেন (মাজেদ) এর ৩ (তিন) ভাই বোনের জন্ম মাত্র ১ (এক) মাসের ব্যবধানে হয়েছে বলে জনমনে কৌতুহলের সৃষ্টি করেছে। ইহাতে প্রতারনার ও জাল-জালিয়াতির এবং জন্ম কেলেংকারীর চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রতিকার ও প্রতিরোধে স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান শহীদ বাদী হয়ে গত ২৬/১২/২৪ ইং তারিখে কুখ্যাত প্রতারক মোসাদ্দেক হোসেন ও মোশারেফ হোসেন (মাজেদ) সহ ১১ (এগারো) জনের বিরুদ্ধে ৪১৯/৪২০/৪০৬/৪৬৭/৪৬৮/ও ১০৯ দঃ বিঃ আইনে মোকাম চরফ্যাসন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিঃ আদালতে সি, আর-৬৮৯/২৪ (চর:) মামলাটি দায়ের করিলে বিজ্ঞ আদালত উহার শুনানী শেষে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অফিসার ইনচার্জ (ওসি), সিআইডি, ভোলাকে নির্দেশ দেন। যাহা এখন সিআইডি ভোলার তদন্তাধীন রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে এবং অভিযোগের বিবরণে প্রকাশ বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সমাজ সেবক, মানবাধিকার সংগঠক ও প্রবীন সাংবাদিক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান শহীদ এর উদ্যোগে ১৯৯১ইং সনে তার পিতা আবদুছ ছোবাহান মিঞার (বর্তমানে মরহুম) দানকৃত সম্পত্তিতে ৩নং চর মাদ্রাজ ইউনিয়নের অন্তর্গত হামিদপুর ৪নং ওয়ার্ডে (গফুরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানে) গফুরপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। স্কুলটি স্থাপনের কয়েক বছর পর প্রতিষ্ঠাতার প্রতিবেশী জনৈক মোসাদ্দেক হোসেন নামের এক ব্যক্তি বিগত ১৫/১২/১৯৯৯ইং তারিখে বিএ পাশের কথা বলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদের জন্য প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বরাবরে দরখাস্ত দেয় এবং বিগত ০১/০১/২০০০ইং তারিখে প্রতারনা মূলক ভাবে উক্ত মোসাদ্দেক হোসেন স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগপত্র হাসিল করে নেয়। অতঃপর শিক্ষক-কর্মচারীর সঙ্গে ক্ষমতা অপব্যবহার, অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার, অনৈতিক কর্মকান্ডের তহবিল তসরুপের ও নানাবিধ * অনিয়ম দূর্নীতির কারনে এবং প্রতারনার দায়ে বিগত ০১/০৭/২০০৪ইং তারিখে তাঁর (মোসাদ্দেক হোসেনের) নিয়োগ বাতিলের মাধ্যমে চাকুরীচ্যুত করা হয়। ইহাতে বিতাড়িত হওয়া চাকুরীচ্যুত প্রতারক স্বভাবের (মোসাদ্দেক হোসেন পার্শ্ববর্তী চর আফজাল সাকিনের আলহাজ্ব ওয়াহেদ আলী মালতিয়া দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক পদে চাকুরী নেয় এবং বিগত ১০/০৮/২০০৪ইং তারিখে যোগদানের মাধ্যমে বেতন ভাতা উঠায়। তারপর থেকে স্কুলটির সহকারী শিক্ষিকা শাহিনা বেগম তাঁর (মোসাদ্দেক হোসেনের) স্থলাভিসিক্ত হয়। পক্ষান্তরে বিতাড়িত ও চাকুরীচ্যুত মোসাদ্দেক হোসেন তাঁর চাকুরী বাতিলের বিষয়টি চাপা রেখে গোপনে গোপনে পূর্বের নিয়োগপত্রের দোহাই দিয়ে ভূয়া প্রধান শিক্ষক দাবী করে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিকে বাদ দিয়ে বিধি বর্হিভূত উপায়ে স্কুলটির অর্গানাইজিং কমিটির স্থলে একটি ম্যানেজিং কমিটি গঠন পূর্বক অনুমোদন করায়। পরবর্তী সময়ে উহা প্রকাশ পাইলে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বাদী হয়ে উক্ত ভূয়া-ভাক্ত ভাবে গঠনকৃত ও অনুমোদিত কমিটির বিরুদ্ধে তখনকার ভোলাস্থ চরফ্যাসন উপজেলা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দেং নং-১৩৯/০৫ মোকদ্দমাটি দায়ের করিলে বিজ্ঞ আদালত উহার শুনানী শেষে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারীর আদেশ দেয়। তখন প্রতারক স্বভাবের মোসাদ্দেক হোসেন গংরা স্কুলটিকে

স্থানান্তরের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং পায়তারা চালায়। ফলে, বিগত ২৫/০২/২০০৮ইং তারিখে দৈনিক দক্ষিনাঞ্চল ও সাপ্তাহিক দ্বীপাঞ্চল কন্ঠ পত্রিকায় “উপ-পরিচালক হোসনেয়ারা সহ ২০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা, ভূয়া ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন দিয়ে একটি স্কুলকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার পায়তারা করছেন স্থানীয় ইউ/পি চেয়ারম্যানসহ বিএনপির দুই নেতা” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
অত:পর বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞায় মামলা চলমান থাকা অবস্থায় মোসাদ্দেক হোসেন গংরা স্বার্থান্বেষী একটি মহলের একান্ত যোগ সাজসে বে-আইনী ক্ষমতাবলে বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষার মাধ্যমে

ভূয়া কমিটির ভিত্তিহীন রেজুলেশনে এবং স্থানীয় চেয়ারম্যানের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অসত্য প্রত্যায়নে উদ্ভট ও বানোয়াট কল্প-কাহিনীতে উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে জেলা/উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদ্বয়ের মিথ্য। প্রতিবেদনে সরে জমিনের বিপরীতে জোটবদ্ধ হয়ে স্কুলের মূল জায়গাটি মেঘনা নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে এমন ধরনের বানোয়াট উক্তির যুক্তিতে হাওয়া থেকে পাওয়া সংবাদের ভিত্তিতে মোটা অংকের ঘুষ বানিজ্যের বিনিময়ে ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শনে না গিয়ে সত্যতা যাচাই ব্যতিরেখে মনগড়া ভাবে আইন পরিপন্থী উপায়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা পরিদপ্তর, বরিশাল অঞ্চল, বরিশাল এর তখনকার অসাধু স্বভাবের উপ-পরিচালক, ডা. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান কর্তৃক বিগত ১৭/১০/২০১১ইং তারিখে তাঁর দাপ্তরিক ১০৬৫৫ স্মারকে স্কুলটিকে হামিদপুর থেকে চর আফজালে স্থানান্তর করে নেয়ার জন্য অনুমতিপত্র দেয়। ফলে, স্কুলটিকে হামিদপুর থেকে চর আফজালে স্থানান্তর করে নেয়। তাহাতে জনৈক সাহেব আলী রাড়ী গংদেরকে চাকুরী দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারনার ফাদে ফেলে ৩ জনের কাছ থেকে ৮ (আট) শতাংশের একখন্ড জমিতে দোচালা একটি টিনের ঘর উঠায়ে গফুরপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামে সাইন বোর্ড লাগিয়ে জনৈক মুকবুল মোল্লাকে সভাপতি নির্বাচিত করে প্রতারক মোসাদ্দেক হোসেন নিজে প্রধান শিক্ষক দাবী করে তার ৩ ছেলে, ২ মেয়ে, ১ বোন, ১ জামাই ও ১ পুত্রাকে শিক্ষক কর্মচারী পদে নিয়োগ দেয় এবং বিদ্যালয়টি পরিবারিক পাঠশালা বানায়। তারই ধারা বাহিকতায় ০১/০৭/২০০৪ইং তারিখ হতে গত ১৩/০৪/২০২২ইং তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বিধি বর্হিভূত উপায়ে একাধিক কমিটি গঠন করা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বাদী হয়ে প্রতারক মোসাদ্দেক হোসেন ও মোশারেফ হোসেন (মাজেদ) গংদের বিরুদ্ধে ১০ জনকে বিবাদী করে বিগত ০১/০৮/২০২২ইং তারিখে স্কুলটিকে পূর্বের জায়গায় স্থানান্তরের এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি স্বত্ত্ব থাকা মর্মে ঘোষণা মূলক ডিক্রীর দাবীতে মোকাম চরফ্যাসন সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৬৭৬/২২নং মোকদ্দমাটি দায়ের করিলে বিজ্ঞ আদালত উহার শুনানী শেষে বিধি বর্হিভূত উপায়ে গঠিত কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক গংদের কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞার জারীর আদেশ দেয়। পরবর্তীতে উহা প্রত্যাহার চেষ্টার বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে মিস কেইস-৭৫/২৩ খারিজ আদেশের পর উহার সই মোহর কপি উঠায়ে মহামান্য হাইকোর্টে ফৌঃ বিঃ ৫৪৭৩/২৩ দায়ের করিলে আদালতে শুনানী শেষে দেং নং ৬৭৬/২২নং মোকদ্দমার নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয় এবং প্রথমে ৬ (ছয়) মাসের জন্য মেয়াদ বৃদ্ধি পায়। অতঃপর গত ২২/১০/২০২৪ইং তারিখে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি রুল আদেশটি প্রত্যাহার করা হয়। তাহাতে বাদীপক্ষ হাইকোর্টের জাজমেন্টের বিরুদ্ধে মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে গত ১৮/১১/২০২৪ইং তারিখে সিভিল পিটিশন ফর লীভ টু আপীল ৩৮৫৬/২৪ রুজু করা হয়। যাহা এখন চলমান রয়েছে। তবে, প্রশ্ন হচ্ছে, ভূয়া প্রধান শিক্ষক দাবীকারী মোশারেফ হোসেন (মাজেদ) ২০১৪ সালে যদি স্কুলটির শিক্ষক কর্মচারীর ভোটার তালিকায় অফিস সহকারী হন। তাহলে ২০/০৩/২০১৫ইং তারিখে স্কুলটির নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দাবী করেন কি ভাবে? আবার বিগত ২৯/০৩/২০১৮ইং তারিখের চরফ্যাসন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমন্বয় পরিষদের শিক্ষক-কর্মচারীর অনুমোদিত ভোটার তালিকায় প্রতারক পিতা মোসাদ্দেক হোসেন স্কুলটির প্রধান শিক্ষক পদে তালিকাভুক্ত হন। ইহাতে স্থানীয়দের হতবাক করে তুলেন। এহেন কর্মকান্ডে সচেতন মহল তাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, বাপ বেটার প্রতারনার আস্ফালন বেড়ে গেছে, বিধায় তাদের বিরুদ্ধে এখন শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়েছে। এরিমধ্যে বিধি বর্হিভূতভাবে স্কুলটিকে হামিদপুর থেকে চর আফজালে স্থানান্তরের জন্য গত ১৭/১০/২০১১ইং তারিখে উপ-পরিচালক, বরিশাল অঞ্চল, বরিশালের ১০৬৫৫নং স্মারক আদেশটি গত ০১/০৬/২০২৫ইং তারিখে মহামান্য হাইকোর্টের ৭৯৬২ নম্বরের একরিটাদেশে বাতিল করায় স্কুল ভবন এখন ৯১ এর স্থাপন কালের ঠিকানা হামিদপুর ৪নং ওয়ার্ডেই স্থানান্তর করে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।