মাখদুমা সামি কল্লোল: বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বাকৃবি) দীর্ঘ ২৫ বছর পর মুনাফা অর্জনের পথে অগ্রসর হচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বড় এ প্রতিষ্ঠানটি কৃষি ও কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সারাদেশে ১০৩৮টি শাখার মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।
ব্যাংকটি সর্বশেষ মুনাফা করেছিল ২০০১ সালে। এরপর থেকে লোকসানে পড়লেও ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে নতুন পরিবর্তনের সূচনা হয়। বিশেষ করে সঞ্চিয়া বিনতে আলী ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগ দেওয়ার পর থেকে ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। তার নেতৃত্বে শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ের গতি বাড়ে, ফলে চলতি অর্থবছরে ব্যাংকটির পরিচালনগত মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৪০০ কোটি টাকা। কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা, আগামী ৩০ জুন ২০২৬ নাগাদ এ মুনাফা ২ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হবে।
এছাড়া রেমিট্যান্স অর্জনেও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক যুগান্তকারী সাফল্য দেখিয়েছে। চলতি বছরের আট মাসে ব্যাংকটিতে এসেছে ২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এতে রেমিট্যান্স আহরণে সকল ব্যাংকের মধ্যে বাকৃবি দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে।
ব্যাংক ব্যবস্থাপনার ভাষ্যমতে, বর্তমান সময়ে শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ের সাফল্যই মুনাফা অর্জনের মূল চালিকা শক্তি। শুধু গত দুই মাসেই ১,১৫১ কোটি টাকা শ্রেণীকৃত ঋণ আদায় সম্ভব হয়েছে। সময়োপযোগী কর্মপরিকল্পনা ও নিয়মিত তদারকির ফলেই এ অর্জন এসেছে বলে কর্মকর্তারা মনে করছেন।
এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানেও বর্তমান প্রশাসন কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। পদোন্নতি বঞ্চিতদের পদোন্নতি, গৃহনির্মাণ অগ্রিম সহজীকরণ, লাঞ্চ ও হিসাব সমাপনী ভাতা বৃদ্ধি এবং নতুন অর্গানোগ্রাম প্রবর্তন—এসব উদ্যোগের মাধ্যমে কর্মপরিবেশে স্থিতিশীলতা ফিরেছে।
বর্তমানে কৃষি ও এসএমই খাতে অর্থায়ন এবং রেমিট্যান্স আহরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক দেশের অর্থনীতিতে নতুন আশার আলো জাগিয়েছে।