# জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন পিরোজপুর জেলা বিএনপির সাবেক সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী মশিউর রহমান স্বপন
স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে পিরোজপুর-৩ আসনে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নির্বাচন কেন্দ্রীক দলীয় কার্যক্রম, মিছিল-মিটিং, সভা ও পথ সভা করছেন পিরোজপুর-৩ আসনের স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা। বিএনপি’র দলীয় মনোনায়ন প্রত্যশীরা মাঠে কাজ করছেন। এর মধ্যে গরিব ও অসহায় মানুষের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন পিরোজপুর জেলা বিএনপির সাবেক সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী মশিউর রহমান স্বপন। তিনি নিজেও বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। তাকে নিয়ে তৃণমূলের দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ এবং উদ্দীপনা দেখা গেছে।
এরই অংশ হিসেবে জাতীয় সংসদীয় আসন পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) এর বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকেই। এর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য তালিকায় রয়েছেন চারজন। মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মো. রুহুল আমিন দুলাল, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী মশিউর রহমান স্বপন, জেলা বিএনপির সদস্য ও মঠবাড়িয়া পৌর বিএনপির আহবায়ক কেএম হুমায়ুন কবীর এবং উপজেলা বিএনপি মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট উম্মে সালমা সুমি। এছাড়াও অন্য অন্য দল ও স্বতন্ত্র থেকেও অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে।
মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী বলছেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়নের জন্য অনেকেই যার যে স্থান রয়েছে সেখান থেকে চেষ্ট করছেন। চলছে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে জোর তদবিরও। শেষ পর্যন্ত এই উপজেলায় কে পাবেন ধানের শীষ প্রতীক এমন আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই।
এদিকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে পিরোজপুর জেলার তিনটি সংসদীয় আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। প্রার্থীরা হলেন-পিরোজপুর-১ (পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি ও নাজিরপুর) আসন থেকে সাবেক সংসদ আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ছোট ছেলে আল্লামা মাসুদ সাঈদী, পিরোজপুর-২ (নেছারাবাদ, কাউখালী ও ভান্ডারিয়ার) থেকে মনোনীত হয়েছেন সাঈদীর মেজ ছেলে আল্লামা শামীম সাঈদী, পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে মনোনীত হয়েছেন সংগঠনটির মঠবাড়িয়া উপজেলা আমীর অধ্যাপক শরীফ আব্দুল জলিল। তিনটি আসনে প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে তৃণমূলের দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ এবং উদ্দীপনা দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি পোস্ট করে অভিনন্দন জানানো হচ্ছে। নাজিরপুর উপজেলার সাধারণ মানুষ বলেন পরিবর্তিত পরিচিতিতে সর্বস্তরের মানুষ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে।
১১টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মঠবাড়িয়া উপজেলা। একটি উপজেলা নিয়ে গঠিত জাতীয় সংসদীয় আসন পিরোজপুর-৩। এখানে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ২১ হাজার। এই এলাকায় স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ,ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে পরিচিত রুহুল আমিন দুলাল, মশিউর রহমান স্বপন,এ কে এম হুমায়ুন কবীর ও উম্মে সালমা সুমি। তারা এলাকায় গণসংযোগ,সভা,পথ সভা,কমিটি গঠন থেকে শুরু করে সাধারণ ভোটারের কাছে গিয়ে তাদের দুঃখ কষ্টের কথা শুনছেন। দীর্ঘদিনের ভোট না দেওয়ার আক্ষেপের বিষয়ে আসস্থ করছেন। এলাকার উন্নয়ন, গণতন্ত্র পুনগঠনসহ সকলকে নিয়ে কাজ করার আহব্বান জানায়। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ মার্কাার প্রার্থী ছিলেন মো.রুহুল আমিন দুলাল। ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে শুরু হওয়া এই নেতা উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা বিএনপির আহব্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক ও পিরোজপুর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন। দলীয় অন্তঃকোন্দলের শিকার হওয়া রুহুল আমিন দুলাল দল থেকে সাময়িক বরখাস্ত হলেও এলাকায় জনপ্রিয়তা রয়েছে ব্যপক। এলাকাবাসীর ধারণা, বিএনপির মনোনয়নে এবার ফের ধানের শীষ মার্কা পাবেন রুহুল আমিন দুলাল।
এলাকার উন্নয়ন ও সকলকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাসের কথা উল্লেখ করে রুহুল আমিন দুলাল বলেন, জনগণের সমর্থনের উপর গুরুত্ব দিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দিবেন। সেদিক থেকে মঠবাড়িয়ার মানুষ আমাকে ভালোবাসে। এখানকার মানুষ আমাকে চায়। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সময় বিভিন্ন হামলা-মামলার শিকার হয়েছি এবং দলের নেতা-কর্মীদের আগলে রেখেছি। দল থেকে মনোনায়ন পেলে তিনি এ অঞ্চলের মানুষের ভোট অধিকার ফিরিয়ে দিবেন। শিক্ষা,স্থাস্থ্য নিয়ে কাজ কারবেন। এছাড়াও সন্ত্রাশ, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত একটি আধুনিক মঠবাড়িয়া উপজেলা গড়বেন বলে আশ্বাস্থ করেন। ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে শুরু করা আইনজীবী মশিউর রহমান স্বপন বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার আওয়ামী লীগের সময়কালে নানা হামলা-মামলার শিকার হন। দীর্ঘসময় ধরে ঢাকা কেন্দ্রীক রাজনীতি করেন। পিরোজপুর জেলা যুবদলের সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক ও মঠবাড়িয়া বিএনপির সদস্য ছিলেন। আইন পেশার পাশাপাশি রাজনীতিতেও ছিলো তার সক্রিয় অবস্থান। কাজের সুযোগ পেলে মঠবাড়িয়ার উন্নয়ন, সঠিক শিক্ষা ব্যবস্থা, গণতন্ত্র বাস্তবায়ন, চাঁদাবাজ ও মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে চান আইনজীবী মশিউর রহমান স্বপন। তিনি বলেন,মানব কল্যাণে কাজ করাই আমার ব্রত। রাজনীতিকে ক্ষমতার হাতিয়ার নয় বরং মানুষের জন্য সেবা করার মহান সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবো। এছাড়া দীর্ঘ একটা সময় এখানের মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। আমি ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। এখানকার নোংরা রাজনীতি পরিবর্তন করতে চাই।
ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে শুরু হওয়া কে এম হুমায়ন কবির ছিলেন মঠবাড়িয়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও আহব্বায়ক। বর্তমানে মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি প্রর্থী তিনি। বিএনপির সকল কর্মসূচি থেকে শুরু করে ছাত্র আন্দোলন সব জায়গায় অবদান রাখা বিএনপির এই নেতা পিরোজপুর-৩ আসনের মনোনায়ন প্রত্যাশী। কে এম হুমায়ন কবির বলেন,দলের ত্যগী নেতা হিসাবে আমি মনোনায়ন প্রত্যাশা করি। ১৯৮৩ সাল থেকে এই দলের সঙ্গে জড়িত। দুর্দিনে দলের বিভিন্ন কর্যক্রমকে সামনে রেখে হামলা-মামরা শিকার হয়েছি। কর্মীদের ভালোবেসে সুবিধা-অসুবিধা দেখেছি। দুর্নীতি ও মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে তাই দলের কাঙ্খিত নেতার প্রয়োজন। আমাকে দল থেকে মনোনীত করলে জনগণের দাবি আদায়ে কথা বলবো। দুর্নীতি মুক্ত সমাজ গড়বো এবং মঠবাড়িয়ার উন্নয়নে কাজ করে যাবো।
পারিবারিক রাজনীতি থেকে হাতে খড়ি অ্যাডভোকেট উম্মে সালমা সুমি বর্তমানে মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপি মহিলা দলের সভাপতি। এর আগে তিনি উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ছিলেন। দাদা ও বাবা ছিলেন উপজেলার ১নং ইউনিয়ন তুষখালির একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান। পরিবার থেকে পাওয়া রাজনীতি আরও সুন্দর ও সুষ্ঠ ভাবে করতে উম্মে সালমা সুমিও পিরোজপুর-৩ আসনের মনোনায়ন প্রত্যাশী। তিনি বলেন,মঠবাড়িয়ার মাটি ও মানুষ আমাকে ভালোবাসে। দল থেকে আমাকে মনোনীত করলে এলাকার উন্নয়নে কাজ করবো। মাদক মুক্ত সমাজ গড়বো। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো। আর দল থেকে যদি মনোনায়ন নাও পাই তাহলে যাকে মনোনায়ন দিবে তাকে সমার্থক দিবেন বলেও জানান আইনজীবী উম্মে সালমা সুমি।